
বাংলাদেশে আসছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপ-কমিটির একটি প্রতিনিধিদল। পাঁচ সদস্যের এ দলটি আগামী সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে। সফরকালে তারা বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্পর্কের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবেন এবং কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই সফরের অংশ হিসেবে প্রতিনিধিদলটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও, সুশীল সমাজ, শ্রমিক সংগঠন এবং বাংলাদেশে কার্যরত বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে। পাশাপাশি তারা রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে গিয়ে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার দুর্দশা মূল্যায়ন করবেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এ সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। বর্তমানে এই সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ ও ইইউ নতুন করে একটি ‘অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি (পিসিএ)’ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেবেন মৌনির সাতুরি (গ্রিনস/ইএফএ, ফ্রান্স)। তার সঙ্গে রয়েছেন ইসাবেল উইসেলার-লিমা (ইপিপি, লুক্সেমবার্গ), আরকাদিউস মুলারচিক (ইসিআর, পোল্যান্ড), উরমাস পায়েত (রিনিউ ইউরোপ, এস্তোনিয়া) এবং ক্যাটারিনা ভিয়েরা (গ্রিনস/ইএফএ, নেদারল্যান্ডস)। এই সফরে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও মানবিক সংকট-দুটিই আন্তর্জাতিকভাবে নতুন করে আলোচনায় আসবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।