রাজস্ব আদায়ে উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা

করদাতার ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টির শঙ্কা

আপলোড সময় : ১৩-০৯-২০২৫ ০১:২০:৪০ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-০৯-২০২৫ ০১:২০:৪০ পূর্বাহ্ন

* শিল্প-কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়েছে এবং কমেছে মুনাফা। ফলে ব্যবসায় বাড়তি কর পরিশোধের সক্ষমতা কমে গেছে
* সরকার চলতি অর্থবছরে গত অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বড় আকারে বাড়িয়েছে। এতে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায়ে এনবিআর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।
* আয়কর খাতের লক্ষ্যমাত্রা ৪২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, যা এনবিআরের ইতিহাসে অন্যতম উচ্চ হার
* মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) খাতে ৩০ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং কাস্টমস ডিউটিতে ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে
 
 
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারের রাজস্ব আদায়ের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা করদাতাদের ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টির শঙ্কা বাড়াবে। কারণ দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ এখনো স্থিতিশীল হয়নি। বরং শিল্প-কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়েছে এবং কমেছে মুনাফা। ফলে ব্যবসায় বাড়তি কর পরিশোধের সক্ষমতা কমে গেছে। তাছাড়া কর আদায়েও গতিশীলতা নেই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থনীতিবিদদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকার চলতি অর্থবছরে গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) তুলনায় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বড় আকারে বাড়িয়েছে। এতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। বিশেষ করে আয়কর খাতের লক্ষ্যমাত্রা ৪২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, যা এনবিআরের ইতিহাসে অন্যতম উচ্চ হার। আর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) খাতে ৩০ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং কাস্টমস ডিউটিতে ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এনবিআরকে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। যেখানে বিগত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগৃহীত হয়েছিল। নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ করতে এনবিআরের তিনটি প্রধান ইউনিটকে আগের বছরের তুলনায় ২৯ থেকে ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে। অথচ গত অর্থবছরে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ২ দশমিক ২৩ শতাংশ, যা ইতিহাসে অন্যতম নিম্ন প্রবৃদ্ধি। গত অর্থবছরের জুন মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য থেকে ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ ঘাটতি ছিল, যা বছর শেষে ১৯ শতাংশ হ্রাস পায়।
সূত্র আরো জানায়, অর্থবছরের শেষ মাসে সাধারণত কর আদায়ে গতি দেখা যায়। কিন্তু এবার তা হয়নি। বরং এনবিআরের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, এডিপি বাস্তবায়নে দুর্বলতা, বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং ব্যবসার মন্দা এর জন্য দায়ী। পাশাপাশি এখনো কাক্সিক্ষত প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার আলোর মুখ দেখেনি এনবিআর। ২০২৫ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে করনীতি ও কর প্রশাসনের বিভাজনের জন্য যে অধ্যাদেশ পাস হওয়ার কথা ছিল, তাও পিছিয়ে গেছে। আর সংস্কার বাস্তবায়ন না হওয়ায় করদাতাদের হয়রানি বেড়েছে। কারণ এখন আগের করদাতাদের থেকেই জোর করে লক্ষ্যমাত্রা আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে। আর এমন দুর্বল রাজস্ব প্রাপ্তির মধ্যে বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার চলতি অর্থবছরের জন্য ব্যয় সংকোচনমূলক বাজেট তৈরি করেছে।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসতে পারে। উন্নয়ন বাজেটও রাখা হয়েছে গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এমন অবস্থঅয় রাজস্ব আদায়ে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত না হলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net