
বেতন-বৈষম্য দূরীকরণসহ ৯ দফা দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয়ের কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সচিবালয়ের তিন, ছয় ও সাত নম্বর ভবনের মাঝখানে ‘বাদাম তলা’ নামে পরিচিত পয়েন্টে কয়েকশ কর্মচারী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন। পরে বেলা ১২টার দিকে কর্মসূচি স্থগিত করে নিজ নিজ দফতরে কাজে যোগদান করেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। এর আগে সকালে ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগ এনে অর্থ বিভাগের এক যুগ্মসচিবের অপসারণ এবং প্রশাসনিক (এও) ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের (পিও) সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতির দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন সচিবালয়ে কর্মরত কর্মচারীরা। কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ তোয়াহার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বলা হয়, দেশে এখন বৈষম্যবিরোধী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের ক্ষেত্রেও কোনও বৈষম্য হবে না। আমরা এই সরকারের সঙ্গে আছি। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আন্দোলনকারী ৯ দফা দাবি জানান। এরমধ্যে সমতার ভিত্তিতে ২০টি গ্রেডের পরিবর্তে ১০টি গ্রেড করার দাবিও রয়েছে। তারা বলছেন, এতে করে বেতন বৈষম্যও দূর হবে। দীর্ঘদিন তারা বেতন বৈষম্যের শিকার বলেও দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। ডেপুটি সেক্রেটারি এবং যুগ্ম সচিব পদ সংরক্ষণের দাবিও জানান তারা। তাদের ভাষ্য, এসব পদ বাড়লে নিচের পদগুলোর জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে। বেতন বৈষম্য কমিয়ে আনাসহ এক সপ্তাহের মধ্যে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ৯ দফা দাবি না মেনে নিলে আগামী ৪ ডিসেম্বর সচিবালয়ে প্রাঙ্গণে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার জন্য তাদের পদোন্নতি আটকে আছে। তারা এর আগে পদোন্নতির দাবি নিয়ে গেলে ওই কর্মকর্তারা খারাপ আচরণ করেছেন এবং দাবি জানানো কর্মচারীদের অপসারণও করছেন তারা। তাদের পদোন্নতি কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব রয়েছেন, যিনি তাদের দাবি অগ্রাহ্য করছেন। নাদিরা সুলতানা নামে সেই যুগ্ম সচিবের অপসারণ দাবি করে সচিবালয়ে স্লোগান দেন এই কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব ড. নাদিরা সুলতানা সচিবালয়ে ‘বিশৃঙ্খলা উসকে দিয়েছেন এবং কর্মচারীদের সঙ্গে অমানবিক, অসৌজন্যমূলক ও আক্রমণাত্মক আচরণ করেছেন’— এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে গত মঙ্গলবার বিকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এই কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। যুগ্মসচিব নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিবের কাছে লিখিত আবেদনও দেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবারও টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে যান তারা।