ভরা তিস্তা এখন মরা খাল

আপলোড সময় : ০৬-০২-২০২৫ ১০:৪২:১৯ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৬-০২-২০২৫ ১০:৪২:১৯ পূর্বাহ্ন
আ. মতিন সরকার, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) ভরা তিস্তা এখন মরা। এক সময়ের খরস্রোতী রাক্ষুসি তিস্তা নদী এখন ধূ-ধূ বালুচরে রূপ নিয়েছে। সেই বালুচরে এবং শাখা নালাগুলোয় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে জেলেদের নৌকা। শাখা নদগুলোতে নেই পানি, বিপাকে জেলে ও নৌ-শ্রমিকরা। তিস্তার চরে এখন নানান ফসলের আবাদ। হরিপুর চরের নৌ-শ্রমিক ছাত্তার মিয়ার ভাষ্য, আজ থেকে ১১ বছর আগে তার পাঁচটি নৌকা ছিল। নৌকার ব্যবসা দিয়ে সে সংসার চালাত। বালুচরে পড়ে থেকে তার চারটি নৌকা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তার মাত্র একটি নৌকা। সেটিও বছরের ৩ মাস মূল নদীতে চলাচল করে। উজানের পলি জমে নদী ভরে উঠায় এখন আর নৌকা চলে না। সে কারণে মাঝি মাল্লারা অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। নদী খনন বা ড্রেজিং করলে হয়তো তিস্তা তার গতিপথ ফিরে পাবে। বর্তমান বাজারে একটি নতুন নৌকা তৈরি করতে প্রায় ২ লাখ টাকা লাগবে। সেটি চরের জেলেদের পক্ষে এখন অসম্ভব। উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত দাসের ভাষ্য, উজানের ঢলে ভরে উঠেছে তিস্তা নদী। নদীতে এখন আর জল থাকে না। নদীতে নৌকা দিয়ে মাছ ধরার আর কোনো সুযোগ নেই। এক যুগ ধরে জেলেরা তিস্তা নদীতে মাছ ধরতে পারে না। সে কারণে অনেকে রিকশা, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাচ্ছে। বালুচরে পড়ে থেকে দিনের পর দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জেলেদের নৌকাগুলো। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, শান্তিরাম, কঞ্চিবাড়ি, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। তিস্তা তার গতিপথ পরিবর্তন করে অসংখ্য শাখা নদে রূপ নিয়েছে। বছরে মাত্র ৬ মাস মূল নদীতে নৌকা চলাচল করে। গোটা বছর পায়ে হেঁটে পারাপার করতে হয় চরবাসীকে। এক সময় উপজেলার পাঁচপীর, বেলকা, মীরগঞ্জ ও তারাপুর খেয়োঘাট হতে পীরগাছা, কাউনিয়া, উলিপুর, কুড়িগ্রাম, কাশিমবাজার, চিলমারি, রৌমারি, মোল্লার চর, ভূরুঙ্গামারি, দেওয়ানগঞ্জ, কামারজানি, গাইবান্ধা, সাঘাটা, ফুলছড়ি, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, বালাশিঘাট, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ রুটে নৌ-চলাচল করত বলেন হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম। তার ভাষ্য পানি না থাকায় সবরুটে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তিস্তায় হাজারও নৌ-শ্রমিক ও জেলে সম্প্রদায় নৌকা চালিয়ে এবং মাছ ধরে সংসার চালাত। সেই সব জেলে ও নৌ-শ্রমিকরা এখন বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে বাপ-দাদার পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশা জড়িয়ে পড়েছে। সেই সাথে বালুচরে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে নৌকা। বাদামের চরের ব্যবসায়ী ফরমান আলীর ভাষ্য, জেলা ও উপজেলা শহর হতে কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চরের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিভিন্ন যানবাহনে জেলা ও উপজেলা শহর হতে মালামাল নিয়ে এসে ব্যবসা করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ঘোড়ার গাড়ি ও পায়ে হাঁটা ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে চরের মধ্যে চলাচলের কোনো মাধ্যম নেই। আজ থেকে ১৫ বছর আগে নৌ-রুটে মালামাল আনা নেয়া করা হতো। নদী ভরে উঠায় জেলে ও মাঝি মাল্লাদের নৌকাগুলো এখন বালুচরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক দৈনিক জনতাকে জানান, নদী ড্রেজিং, খনন ও নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা সরকারের উপর মহলের সিদ্ধানেন্তর ব্যাপার। তবে নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net