
অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, জামাকাপড় ছেঁড়া অবস্থায় তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন একদল যুবক। টেনেহিঁচড়ে নেয়ার সময়ও কেউ তার গায়ে হাত তুলছিলেন। আর কান্নাকাটি করছিলেন অভিনেতা সিদ্দিক। এই অভিনয়শিল্পীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের দোসর বলে তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন। জামাকাপড় ছেঁড়া অবস্থায় রাস্তায় হাঁটিয়ে সিদ্দিককে রমনা থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। অভিনেতা সিদ্দিকের থানা হেফাজতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আতিকুল আলম।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্দিকুরকে মারধর করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ছয়-সাতজন লোক সিদ্দিকুর রহমানকে ধরে ফুটপাত দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার পরনে থাকা কাপড় ছেঁড়া দেখা যায়। এ সময় তাকে মারধর করা হয়।
ভিডিওতে শোনা যায়, সিদ্দিক আওয়ামী লীগের দোসর। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সে সরাসরি ছাত্রদের বিপক্ষে ছিল। তাকে আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে। সিদ্দিককে থানায় সোপর্দ করা হবে। সিদ্দিক ছাত্রদের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। অভিনেতা আর যা-ই হোক, আওয়ামী লীগের দোসরদের বাংলার জমিনে বিচার হবেই। আওয়ামী লীগের আস্তানা এই বাংলার মাটিতে হবে না। সিদ্দিকুর রহমান অভিনয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার ঢাকার গুলশান ও টাঙ্গাইলের মধুপুর আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে তিনি তা পাননি।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, বিকেলে সেগুনবাগিচা এলাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সামনে তাকে আটক করে স্থানীয় কিছু লোকজন। পরে তাকে রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা-হত্যার ঘটনায় গুলশান থানায় করা দু’টি মামলায় তিনি আসামি বলে জানা গেছে। এ কারণে গুলশান থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে। সিদ্দিক মারধরের শিকার হয়েছেন কী না সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাননি বলেও জানান উপকমিশনার। তিনি বলেন, লোকজন হয়তো চড়-থাপ্পড় দিয়ে থাকতে পারে। সেটা তো দেখে বোঝা যায় না। সিদ্দিকের ওপর হামলাকারীরা ছাত্রদলের নেতাকর্মী বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে উপকমিশনার বলেন, প্রথমে অল্প কয়েকজন ছিল, পরে আরও অনেকে এসে যোগ দেয় সেখানে। কিন্তু তারা ছাত্রদলের কিনা তা জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, অভিনেতা সিদ্দিকের জন্ম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায়। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। ঢাকা-১৭ ও টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর ও ধনবাড়ি) আসন থেকে একাধিকবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন এই কৌতুক অভিনেতা।