ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বাঘ-সিংহের খাদ্য বাসি গরুর মাংস সরবরাহ

আপলোড সময় : ০৪-০৫-২০২৫ ১০:২৮:৩০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-০৫-২০২৫ ১০:২৮:৩০ অপরাহ্ন
কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে সরকারি বরাদ্দে বন্যপ্রাণীর খাদ্য সরবরাহে নিয়োজিত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নীতিমালা মোতাবেক পার্কের বেষ্টনীতে বাঘ-সিংহের খাবার হিসেবে প্রতিদিন গরু জবাই করে তাজা মাংস দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে বাঘ-সিংহের খাবার দিচ্ছে ফ্রিজে রাখা বাসি গরুর মাংস। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, টেন্ডারের মাধ্যমে সাফারি পার্কে বাঘ-সিংহের খাবার গরুর মাংস সরবরাহে নিয়োজিত রয়েছেন মেসার্স সামির ইন্টারন্যাশনাল নামের ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই ঠিকাদারের কাছে উপ-ভাড়াটিয়া ঠিকাদার হিসেবে বন্যপ্রাণীর মাংস সরবরাহের দায়িত্ব পালন করছেন সাব ঠিকাদার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগ উঠেছে, জিয়াউদ্দিন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকটা ক্ষমতা দেখিয়ে পার্কে খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে পুকুরচুরিতে নেমেছে। সেকারণে ফ্রিজে রাখা বাসি গরুর মাংস প্রতিদিন বাঘ-সিংহের খাবার হিসেবে দিয়ে আসলেও পার্কের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন অনেকটা নীরব ভুমিকায়। অভিযুক্ত জিয়াউদ্দিন গত ৭ বছর ধরে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাতবদল করে খাদ্য সরবরাহে লুটপাটে জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। জানা গেছে, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের বেষ্টনীতে মোট বাঘ আছে চারটি, আর সিংহ আছে তিনটি। একটি প্রাণীকে খাবার হিসেবে প্রতিদিন ৬ কেজি করে গরুর মাংস দিতে হয়।সেই হিসেবে ৭টি বাঘ-সিংহকে গরুর জবাই করে প্রতিদিন ৪২ কেজি গরুর মাংস সরবরাহ দেয়ার জন্য ২০২৪ সালের মে মাসে টেন্ডারের মাধ্যমে একবছরের জন্য কাজটি পেয়েছেন মেসার্স সামির ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। টেন্ডারের কার্যাদেশ অনুযায়ী বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৫২ দিন সাফারি পার্কে বাঘ সিংহকে খাবার দেওয়া হয় না। অবশিষ্ট ৩১৩ দিন ৭টি বাঘ সিংহকে ৪২ কেজি করে মোট ১৩ হাজার ১৪৬ কেজি গরুর মাংস খাবার হিসেবে সরবরাহ দিতে হচ্ছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংস ৮৩০ টাকা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোট ১৩ হাজার ১৪৬ কেজি গরুর মাংস বাবত সাফারি পার্ক থেকে ১ কোটি ৯ লাখ ১১ হাজার ১৮০ টাকা বিল উত্তোলন করবে। সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.মনজুর আলম জানান, একটি গরু জবাই করলে ৮০ থেকে ৯০ কেজি মাংস হয়ে থাকে। ঠিকাদার একদিনে বাঘ-সিংহের খাবার হিসেবে ৪২ কেজি মাংস সরবরাহ দিতে পারে। হয়তো অবশিষ্ট মাংস ফ্রিজে রেখে পরদিন দিয়েছেন। কেউ কেউ ১৫ দিনের বাসি মাংস সরবরাহ দেওয়া হয়েছে বলে বলছে। আদতে এই অভিযোগ সঠিক নয়, আমরা কিন্তু নিয়মিত তদারকি করছি। সাফারি পার্কে প্রাণীর খাদ্য সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পার্টনার (সাব ঠিকাদার) জিয়াউদ্দিনের (০১৮৩৮-৮৫৩৪৯০) মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি রিসিভ না করায় তাঁর  বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ  বলেন,  ঠিকাদার কর্তৃক বাসি গরুর মাংস পার্কের বাঘ- সিংহের খাবার হিসেবে দিচ্ছে এইধরনের একটি ছবি পেয়েছি। ব্যাপারটি দেখার জন্য পার্কের রেঞ্জ অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, টেন্ডারের কার্যাদেশে বলা আছে ঠিকাদার প্রতিদিন গরু জবাই করে তাজা মাংস বাঘ-সিংহের খাবার হিসেবে সরবরাহ করবেন।  সেখানে ফ্রিজে রাখা বাসি মাংস সরবরাহ দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি ঘটনাটি সত্য প্রমাণিত হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net