ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আজ পুরোদমে খুলছে অফিস-আদালত

নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি

আপলোড সময় : ১৫-০৬-২০২৫ ১২:৫৬:১৮ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৫-০৬-২০২৫ ১২:৫৬:১৮ পূর্বাহ্ন
* অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই কর্মস্থলে ফিরছে দক্ষিণের মানুষ
* টার্মিনালগুলোতে ঈদ ফেরতযাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়
* কমলাপুরে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে
* আকাশপথেও ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবীরা
পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আজ রোববার থেকে পুরোদমে খুলছে অফিস-আদালত, বাণিজ্যিকসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভ্যাপসা গরম ও তীব্র পরিবহন সংকটের মধ্যেই ফিরতি পথে ভোগান্তিকে সঙ্গী করে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। যাত্রীদের চাপে এরইমধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ১৪ কিলোমিটারে যানবাহনের ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। এতে বাস, ট্রেন-নৌপথে ঢাকামুখী মানুষের ঢল লক্ষ করা গেছে। তবে কর্মস্থলে ফেরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ অভিযোগ করছেন, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই নগরে ফিরতে হচ্ছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ-গুলিস্তান বাস টার্মিনাল, সদরঘাট এবং কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর গাবতলীসহ বিভিন্ন আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, ফেরতযাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যাত্রীরা বলছেন, পুরো সড়কে খুব বেশি না হলেও তাদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যমুনা সেতুতে। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফেরার পথে যানজট খুব বেশি না থাকলেও রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। এসব রুটে ঢাকায় আসা যাত্রীরা বলছেন, টিকিটের জন্য তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের পর থেকেই রাজধানীতে ফিরতে শুরু করে মানুষ। তবে গতকাল শনিবার রাজধানীর বাস টার্মিনাল, সদরঘাট এবং কমলাপুর রেলস্টেশনে উপচেপড়া ভিড়ই প্রমান করে যাত্রীচাপ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে বাস যাত্রীরা গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে নামছেন। অনেকটা তড়িঘড়ি করে নেমে লোকাল বাস, সিএনজি বা রিকশা চেপে ফিরছেন গন্তব্যে। তবে অধিকাংশ যাত্রীই বিরক্ত।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে, পশ্চিম অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় প্রবেশ করছে গণপরিবহন। প্রতিটি বাসই যাত্রীতে পূর্ণ। ঢাকার প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ী বা সায়েদাবাদে বাস থেকে যাত্রীরা নেমে লোকাল পরিবহন, রিকশা, সিএনজিতে করে বাসায় ফিরছেন। সেজন্য রাজধানীর প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলায় রয়েছে যানজট। তবে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে সায়েদাবাদ রোডে খুবই ধীর গতিতে পার হতে পারছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নড়াইল থেকে এসেছে আলী ইমাম। তিনি বলেন, এবার দীর্ঘ ছুটিতে বাড়ি ছিলাম। রোববার থেকে অফিস শুরু। সেজন্য আগেই পরিবার-পরিজনসহ ফিরেছি। দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে জেলা কুমিল্লা থেকে ফিরেছে সাইফুর রহমান। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, কাল থেকে ক্লাস চলবে, তিশা পরিবহনের বাসে এসেছি। এখান থেকে আরেকটা বাসে করে বাসায় ফিরবো। বাসের জন্য অপেক্ষায় করছি। যাত্রার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দুই ঘণ্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটেছি। বাসই নেই। রাজশাহী থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসের যাত্রী আউয়াল কবির বিরক্তি নিয়ে বলেন, ঈদের আগেও গ্রামে যেতে ভুগেছি। ঈদ শেষেও ঢাকা ফিরতেও সড়কে ভোগান্তিতে পড়তে হলো, ৩ ঘণ্টা দেরি। একই সুর শ্যামলী পরিবহনের বাসে দিনাজপুর থেকে ঢাকা আসা যাত্রী হোসেন আলীর কথাতেও। তিনি বলেন, রাত সাড়ে ৯টার বাস, ভোর ছয়টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়ার কথা, সেখানে পৌঁছলাম ১০টায়। যমুনা সেতুর কাছে আসার পর মনে হচ্ছে, গাড়ি নড়ছেই না। কারণ জানি না, সেতুর মুখে প্রচণ্ড জটলা ছিল। সেটা পাড়ি দিতেই এত দেরি। সায়েদাবাদে গিয়েও চোখে পড়ে একই চিত্র। সেখানে দেখা যায়, সারি সারি দূর-পাল্লার বাস ঢাকায় ঢুকছে। প্রতিটি বাসই যাত্রীতে ভরা। কেউ কেউ স্বস্তি প্রকাশ করলেও অনেকে অভিযোগ তোলেন বাড়তি ভাড়ার। এদিন ভোর থেকে সদরঘাটে ঢাকামুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। এর ফলে ওই এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তাঁতীবাজার মোড় থেকে লঞ্চ টার্মিনাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে আটকে আছে অসংখ্য যানবাহন। প্রতিটি গাড়িই যাত্রীতে ঠাসা। লঞ্চ থেকে নেমে বাসে উঠতে না পেরে অনেকেই আবার হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। রবিউল নামে এক যাত্রী বলেন, বরিশাল থেকে এসেছি। লঞ্চে যাত্রীর চাপ থাকলেও কষ্ট কম হয়েছে। অন্যবারের তুলনায় এবার অনেকটা ভালোভাবেই এসেছি। তেমন কোনো ঝামেলাই পড়তে হয়নি। তবে ঢাকায় এসে বাসে উঠতে পারছি না। তাই হেঁটেই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। সকাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনেও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের যাত্রীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কেউ এসেছেন সপরিবারে, কেউ আবার একা। আজ রোববার থেকে কাজে যোগ দিতে হবে। শফিক নামের এক যাত্রী বলেন, এবার লম্বা ছুটি পেয়েছি। আজ থেকে কাজে যোগ দিতে হবে। এজন্য আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল। যাত্রীর চাপ থাকলেও পরিবার নিয়ে ভালোভাবেই ঢাকা আসতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কর্মস্থলে ফিরতে আসা মানুষ বাস থেকে দল বেঁধে নামছেন। কিছু সময় পরপর বিভিন্ন জেলা থেকে বাস এসে পৌঁছাচ্ছে। দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফেরা বেসরকারি চাকরিজীবী আবু আজিজ জানান, ঈদের ছুটির শেষ হওয়ায়  সকাল ৮টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও এসেছি সাড়ে ১২টায়। যমুনা সেতুতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে। চার লেনের গাড়ি এসে দুই লেনে আটকে যাচ্ছে, বাসগুলো নিয়ম মানছে না। ফলে সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। তার ওপর তীব্র গরমে যাত্রা আরও কষ্টকর হয়ে উঠেছে। একই রুটে যাত্রা করেছেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নাইব হাসান নিয়ম। তিনি বলেন, আমার অফিস শুরু সোমবার, তাই একদিন আগেই ফিরছি। আগেও ঈদে বাড়ি গিয়েছি, কিন্তু যমুনা সেতুতে এত ভোগান্তি কখনও হয়নি। টোল প্লাজায় ৪-৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। সরকারের উচিত এ বিষয়ে নজর দেয়া, তাহলে আমাদের মূল্যবান কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা পোশাক শ্রমিক ইমন আলী বলেন, রোববার থেকে অফিস, তাই আজই ফিরেছি। দীর্ঘ ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটিয়েছি। তবে ফেরার পথে তেমন কোনো সমস্যায় পড়িনি।
ঈদের ছুটির শেষ দিনে ভোর থেকেই রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে দেখা গেছে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে গিয়েছিলেন হাজারো মানুষ। সেই আনন্দ উদযাপন শেষে এখন কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছেন তারা। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের তথ্যসেবা কেন্দ্রের জোবায়ের হোসেন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১৬ টি ট্রেন কমলাপুর পৌঁছেছে। এর মধ্যে বুড়িমারী, রংপুর এক্সপ্রেস ও একতা এক্সপ্রেস-এই ৩ টি ট্রেন বিলম্বে এসেছে। সবগুলো ট্রেনই যাত্রী বোঝাই করে ঢাকা এসেছে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় কমলাপুর রেল স্টেশনে কথা হয় জামালপুর থেকে আসা যাত্রী নাকিবুল আহসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রিয়জনদের ছেড়ে এসেছি, তাই খারাপ লাগছে। তবে ১৫ দিন আগেই ফিরতি টিকেট কেটে রেখেছিলাম। তাই কোনো ঝামেলা ছাড়াই এসেছি। পরিবারসহ ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন জানে আলম। তিনি বলেন, খুলনা থেকে এসেছি। বেশিরভাগ সময় বাসে আসা যাওয়া হয়। বাচ্চাদের শখ, তাই এবার ট্রেনে এসেছি।
অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও একাধিক গাড়ি বিকল হওয়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। শুক্রবার দিনগত মধ্যরাত থেকে যমুনা সেতুর টোল প্লাজা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত থেমে থেমে আবার কখনও ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকেও একই চিত্র দেখা গেছে। শুক্রবার দিনগত মধ্যরাত থেকে মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও যমুনা সেতুসহ সড়কের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক গাড়ি বিকল হয়। গাড়িগুলো সরিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে টোল আদায় ধীর গতির কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আবার সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে যানবাহন ঠিক গাড়ি চলাচল করতে না পারায় টাঙ্গাইল অংশে যানজটের কারণে ধীরগতি তৈরি হয়। এ কারণে মহাসড়কের রাবনা বাইপাস থেকে যমুনা সেতু পূর্বপাড় পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতুপূর্বপাড় পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। তবে পুলিশ ও যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ যানজট নিরসনে কাজ করছেন। তবে যমুনা সেতু পূর্ব থানার ওসি ফয়েজ আহমেদ বলেন, সেতুর ওপর সড়ক দুর্ঘটনায় কারণে সারা রাতই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের ধীরগতির কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরিফ জানান, চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক স্বাভাবিক হচ্ছে। এখন কোথাও যানজট নেই।
ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের। শনিবার নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে নানা ভোগান্তি পেরিয়ে যারা বাড়ি এসেছিলেন, ঈদ শেষে তারাই আবার লঞ্চ ও বাসে গাদাগাদি করে এখন কর্মস্থলে ফিরছেন। এসময় যাত্রীরা অভিযোগ করেন, বাস মালিকরা ৪৫০ টাকার ভাড়া এখন ৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। সাদ্দাম হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, বরিশাল থেকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনে ঢাকা পর্যন্ত অন্য সময় ৫০০ টাকা টিকিট হলেও এখন ৭০০ টাকা নিয়েছে। কয়েকটি বাস কাউন্টার ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে। আরেক যাত্রী শহীদুল বলেন, বাস কর্তৃপক্ষ অন্যান্য সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। এরমধ্যেও চলতি পথে তাদের ইচ্ছে মতো গাড়িতে অতিরিক্ত লোক ওঠায়। বরিশাল থেকে ঢাকা পুরো পথেই এমন ঘটনা ঘটে। পথে প্রশাসনের কোনো নজরদারিও চোখে পড়ে না। সুমন নামের ঢাকাগামী আরেক যাত্রী বলেন, আগে ঈদের ছুটিতে লঞ্চে বরিশাল আসা যাওয়া করা হতো। এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে বাসেই আসা যাওয়া করি। এ কারণেই তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা-বরিশাল আসা যাওয়া করা যায়। কিন্তু এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাস সংশ্লিষ্টরা।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারেফ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে অভিযোগ দেয়, তাহলে সেই বাস কাউন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে বাস টার্মিনাল এলাকায় বুথ বসিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব ও যানজট নিরসনে বাস মালিক গ্রুপ ও প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার সুফল এরইমধ্যে যাত্রীরা পাচ্ছে। মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে কোনো যানজট ছাড়াই বাড়ি ফিরেছে, এখন কোনো ধরনের যানজট ছাড়াই কর্মস্থলে ফিরছে।
বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে এবং ভোগান্তি ছাড়া কর্মস্থলে ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে বাস টার্মিনালে ঈদের আগে থেকেই নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনিয়ম ত্রুটি পেলে সংশ্লিষ্ট বাসগুলোকে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া সড়কে যেন গাড়ি রেখে কেউ ভোগান্তি না তৈরি করে এজন্য সঠিক নির্দেশনা দেয়া আছে। ভোগান্তিমুক্ত যাত্রার নিশ্চয়তা দিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। তবে যাত্রীরা বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী হয়েই তাদের কর্মস্থলে ফিরতে হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন বিভাগ) শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সবসময় সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। লঞ্চগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়তে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট টিমের পাশাপাশি আমাদের সার্বিক সহায়তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।
ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আজ অফিস-আদালত খুলছে। তাই দর্ভোগ এড়াতে অনেকেই ফিরছেন উড়োজাহাজে। গতকাল শনিবার বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে যারা আকাশপথে বাড়ি গিয়েছিলেন, তারা এখন ফিরতে শুরু করেছেন।
বাংলাদেশ বিমানের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের সময় সৈয়দপুর, রাজশাহী ও কক্সবাজার রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালানো হয়েছিল। এখন সেই বিশেষ ফ্লাইট না থাকলেও নিয়মিত ফ্লাইট চলছে। রাজশাহী, সৈয়দপুর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে নিয়মিত ফ্লাইটে যাত্রীরা ফিরছেন।
বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবীর বলেন, এখন স্বাভাবিক ফ্লাইটেই যাত্রী পরিবহন চলছে। কেউ কেউ আবার ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন, আবার অনেকেই ঢাকায় ফিরছেন। অন্যান্য এয়ারলাইন্স যেমন ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার থেকেও জানানো হয়েছে, তারা ঈদের সময় অতিরিক্ত ফ্লাইট না চালালেও নিয়মিত ফ্লাইটগুলোই অব্যাহত রেখেছে।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি শেষে আজ রোববার খুলছে সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। গত ৭ জুন দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। ঈদের ছুটি উপলক্ষে গত ৪ জুন ছিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেষ কর্মদিবস। দেশের সব গণমাধ্যমেও শেষ কর্মদিবস ছিল ওই দিন। ৫ জুন থেকে শুরু হয় সংবাদ কর্মীদের পাঁচ দিন আর সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদে ১০ দিনের ছুটি। সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সব গণমাধ্যমের ঈদের ছুটি শেষ হয় ৯ জুন। আর সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি শেষ হচ্ছে ১৪ জুন। এর আগে ৬ মে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্বাহী আদেশে সরকারি অফিস ১১ ও ১২ জুন ছুটি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ঈদের আগে দুই শনিবার অফিস চালু রাখারও সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাহী আদেশে দুদিন ছুটির ফলে সবমিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটি পান সরকারি চাকরিজীবীরা। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে গত ৭ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ১৭ ও ২৪ মে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। সে অনুযায়ী দুই শনিবার অফিস খোলা ছিল।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net