
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এখন ভয়াবহ সঙ্কটে। খেলাপি ঋণের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার, তৎকালীন সরকারের প্রভাবশালী গোষ্ঠীর ঋণগ্রহণের অপসংস্কৃতি এবং দুর্বল তদারকি একে অনিরাপদ করে তুলেছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ যেন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে নতুন করে, যেখানে বলা হয়েছে- ২০২৫ সালের মার্চ শেষে দেশে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এটা দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় বিতরণ করা মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। এই খেলাপি ঋণের ৭১ শতাংশের বেশি, প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার ৩১ কোটি টাকা মাত্র ১০টি ব্যাংকের খাতায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এককভাবে কিছু গ্রাহকগোষ্ঠী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অনৈতিক প্রভাব, ব্যাংক ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা এবং ‘ঋণ নাও, ফেরত দিও না’ সংস্কৃতি পুরো ব্যাংক খাতকে চরম ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা যেসব ব্যাংকে একক গোষ্ঠীর আধিপত্য ছিল, সেগুলোই বর্তমানে খেলাপির শীর্ষে। তৎকালীন সরকারঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীরা এসব ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে তা আর পরিশোধ করেননি। অনেক ক্ষেত্রে আমানতকারীর টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না।
খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে তালিকার শীর্ষে রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটি ৯৪ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, যার মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৭০ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির মোট ঋণের ৭৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এই বিশাল অঙ্কের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপ একাই খেলাপি করেছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। এস আলম গ্রুপের খেলাপি ঋণ রয়েছে আরও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। এছাড়া বিসমিল্লাহ গ্রুপ, অ্যানটেক্স গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ ব্যাংকের খেলাপি তালিকায়।
জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবর রহমান জানিয়েছেন, এসব ঋণ পূর্ববর্তী সময়ে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে ঋণ আদায়ে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। ছোট ঋণ আদায়ে বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রিসহ বড় গ্রাহকদের ক্ষেত্রে যৌথ ব্যাংকীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল)। মার্চ ২০২৫ শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪৭ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ২৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই ব্যাংক থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক অনুসন্ধানী রিপোর্টে দেখা গেছে, একাধিক ‘পেপার কোম্পানি’র নামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে, যার বড় অংশ এখন অনাদায়ী।
তৃতীয় স্থানে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ২৯ হাজার ৭২১ কোটি টাকা (৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ)। এরপর রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক ২৭ হাজার ৩৫২ কোটি (৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ) এবং আইএফআইসি ব্যাংক ২৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা (৫৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ)। এছাড়া ইউনিয়ন ব্যাংকে খেলাপি ২৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা (৮৯ দশমিক ৮১ শতাংশ), ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে ২২ হাজার ৬৪৬ কোটি (৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ) এবং সোনালী ব্যাংকে ১৯ হাজার ৯১ কোটি টাকা (২১ দশমিক ১১ শতাংশ)। রূপালী ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ ১৭ হাজার ১২৩ কোটি (৩৫ দশমিক ৬২ শতাংশ) এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে ১৪ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা (৩৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ)।
পরিমাণগত দিক থেকে শীর্ষ দশে না থাকলেও খেলাপি ঋণের অনুপাতের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। ব্যাংকটির মোট ঋণের ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশই খেলাপি। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের খেলাপি ৯১ শতাংশ। এছাড়া মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও চৌধুরী নাফিজ সরাফতের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংকে খেলাপির হার ৮৭ দশমিক ১৮ শতাংশ, বেসিক ব্যাংকে ৬৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ৬৭ শতাংশ এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৫৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব ব্যাংকে মূলধনের চেয়ে খেলাপি ঋণ বেশি হওয়ায় কার্যকর ঋণ বিতরণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তদারকি না থাকায় এগুলো কার্যত ‘ব্যাংকের খোলসে মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠান’। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে নামে-বেনামে বিপুল অঙ্কের অর্থ অবাধে তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন এসব ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী খেলাপির সংজ্ঞা কঠোর করায় অনেক ঋণ নবায়নের পরেও আদায় না হওয়ায় খেলাপি হিসেবে ধরা পড়ছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। পরবর্তী এক যুগে রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ মাফ, পুনঃতফসিলের অপব্যবহার এবং জবাবদিহির অভাবে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকায়। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই খেলাপি এখন আর শুধু অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি। আগে একটি সুবিধা ছিল ঋণগ্রহীতা মূল টাকা ফেরত না দিলেও সুদ বা সামান্য কিস্তি দিলেই ঋণ ‘নিয়মিত’ দেখানো যেতো। ২০২৪ সালের আগস্টে এই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকেই প্রকৃত খেলাপির সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এখন আন্তর্জাতিক মান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) ও বেসেল ৩ অনুযায়ী খেলাপির সংজ্ঞা কার্যকর করা হচ্ছে, ফলে বহু ‘গোপন’ খেলাপি এখন প্রকাশ পাচ্ছে। খেলাপি ঋণের এমন চিত্র শুধু ব্যাংক খাতের নয়, পুরো অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। নতুন বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকের তারল্য সংকুচিত হচ্ছে, আমানতকারীদের আস্থা কমছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বাড়ছে, যা বাজেটে সরকারের বাড়তি ব্যয় চাপিয়ে দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা যেসব ব্যাংকে একক গোষ্ঠীর আধিপত্য ছিল, সেগুলোই বর্তমানে খেলাপির শীর্ষে। তৎকালীন সরকারঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীরা এসব ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে তা আর পরিশোধ করেননি। অনেক ক্ষেত্রে আমানতকারীর টাকা বিভিন্ন কৌশলে আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এসব ঋণ এখন আর ফেরত আসছে না।
খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে তালিকার শীর্ষে রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটি ৯৪ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, যার মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৭০ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির মোট ঋণের ৭৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এই বিশাল অঙ্কের মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপ একাই খেলাপি করেছে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। এস আলম গ্রুপের খেলাপি ঋণ রয়েছে আরও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। এছাড়া বিসমিল্লাহ গ্রুপ, অ্যানটেক্স গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ ব্যাংকের খেলাপি তালিকায়।
জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবর রহমান জানিয়েছেন, এসব ঋণ পূর্ববর্তী সময়ে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে ঋণ আদায়ে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। ছোট ঋণ আদায়ে বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রিসহ বড় গ্রাহকদের ক্ষেত্রে যৌথ ব্যাংকীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল)। মার্চ ২০২৫ শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪৭ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ২৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই ব্যাংক থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক অনুসন্ধানী রিপোর্টে দেখা গেছে, একাধিক ‘পেপার কোম্পানি’র নামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে, যার বড় অংশ এখন অনাদায়ী।
তৃতীয় স্থানে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ২৯ হাজার ৭২১ কোটি টাকা (৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ)। এরপর রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক ২৭ হাজার ৩৫২ কোটি (৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ) এবং আইএফআইসি ব্যাংক ২৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা (৫৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ)। এছাড়া ইউনিয়ন ব্যাংকে খেলাপি ২৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা (৮৯ দশমিক ৮১ শতাংশ), ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে ২২ হাজার ৬৪৬ কোটি (৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ) এবং সোনালী ব্যাংকে ১৯ হাজার ৯১ কোটি টাকা (২১ দশমিক ১১ শতাংশ)। রূপালী ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ ১৭ হাজার ১২৩ কোটি (৩৫ দশমিক ৬২ শতাংশ) এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে ১৪ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা (৩৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ)।
পরিমাণগত দিক থেকে শীর্ষ দশে না থাকলেও খেলাপি ঋণের অনুপাতের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। ব্যাংকটির মোট ঋণের ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশই খেলাপি। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের খেলাপি ৯১ শতাংশ। এছাড়া মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও চৌধুরী নাফিজ সরাফতের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংকে খেলাপির হার ৮৭ দশমিক ১৮ শতাংশ, বেসিক ব্যাংকে ৬৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ৬৭ শতাংশ এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৫৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব ব্যাংকে মূলধনের চেয়ে খেলাপি ঋণ বেশি হওয়ায় কার্যকর ঋণ বিতরণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তদারকি না থাকায় এগুলো কার্যত ‘ব্যাংকের খোলসে মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠান’। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে নামে-বেনামে বিপুল অঙ্কের অর্থ অবাধে তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন এসব ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী খেলাপির সংজ্ঞা কঠোর করায় অনেক ঋণ নবায়নের পরেও আদায় না হওয়ায় খেলাপি হিসেবে ধরা পড়ছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। পরবর্তী এক যুগে রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ মাফ, পুনঃতফসিলের অপব্যবহার এবং জবাবদিহির অভাবে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকায়। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই খেলাপি এখন আর শুধু অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি নীতিনির্ধারণী দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি। আগে একটি সুবিধা ছিল ঋণগ্রহীতা মূল টাকা ফেরত না দিলেও সুদ বা সামান্য কিস্তি দিলেই ঋণ ‘নিয়মিত’ দেখানো যেতো। ২০২৪ সালের আগস্টে এই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকেই প্রকৃত খেলাপির সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। এখন আন্তর্জাতিক মান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) ও বেসেল ৩ অনুযায়ী খেলাপির সংজ্ঞা কার্যকর করা হচ্ছে, ফলে বহু ‘গোপন’ খেলাপি এখন প্রকাশ পাচ্ছে। খেলাপি ঋণের এমন চিত্র শুধু ব্যাংক খাতের নয়, পুরো অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। নতুন বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকের তারল্য সংকুচিত হচ্ছে, আমানতকারীদের আস্থা কমছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বাড়ছে, যা বাজেটে সরকারের বাড়তি ব্যয় চাপিয়ে দিচ্ছে।