ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ

সময় ক্ষেপণের আড়ালে চূড়ান্ত আঘাতের ছক

আপলোড সময় : ২১-০৬-২০২৫ ০৬:৫৭:৩২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৬-২০২৫ ০৬:৫৭:৩২ অপরাহ্ন
* যুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে ২ সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
* ট্রাম্পের দুই সপ্তাহের সময়সীমা হতে পারে কৌশল বা ছক বিশ্লেষণ আল জাজিরার
* তেহরানে হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, ৩ মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস
* ইসরায়েলে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরান : আইডিএফ
* হামলা বন্ধ না হলে কোন আলোচনা নয় : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
* মার্কিন পরিকল্পনা নিয়েই জেনেভায় আলোচনা



২য় সপ্তাহে পা দিলেও ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধে যোগ দেয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে হামলা করার ব্যাপারে ২ সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুই সপ্তাহের এই সময়সীমা হতে পারে একটি কৌশল বা ছক। এদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো ইরানকে আলোচনার আহ্বান করলেও ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রেখেছে। আর এর জবাব দিতে মোটেও দেরী করছে না ইরানও। হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে ইরানের রাজধানী তেহরানের আরেকটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল শুক্রবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার এই তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে ইরানের তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস এবং সামরিক বাহিনীর এক কমান্ডারকেও হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। অন্যদিকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়েরশেবায় ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মাইক্রোসফটের অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় বড় ধরনের প্রাণহানি না ঘটলেও অন্তত ৭ জন সামান্য আহত হয়েছেন। এদিকে আইডিএফ আরো জানিয়েছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরান। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোরবেলা থেকে এই নিক্ষেপ শুরু হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে বলেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রাণঘাতী এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের চলমান এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিয়ে নতুন বার্তা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউস বলেছে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে অংশগ্রহণ নিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে কিনা সেই বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার একটা বাস্তব সুযোগ সামনে আছে কি না এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সরাসরি জড়াবে কিনা। লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বরাবরই কূটনৈতিক পথকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন, তবে প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহারে তিনি দ্বিধা করেন না। এসময় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। হোয়াইট হাউসের এই মুখপাত্র আরও বলেন, ইরান এর আগে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির এতো কাছে আসেনি এবং এটা বাস্তবতা। তার ভাষায়, মার্কিন প্রশাসন ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ট্রাম্প সদ্যই একটি গোপনীয় গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়েছেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত আপডেট পাচ্ছেন। লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখছেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুই সপ্তাহের এই সময়সীমা হতে পারে একটি কৌশল বা ছক। বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে গতকাল শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো এখনও দুই সপ্তাহের ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই ইরানে হামলা চালাতে পারেন। বিশারা বলেন, তিনি (ট্রাম্প) এই সময়সীমাকে হয়তো একটা কৌশল বা ছক হিসেবে ব্যবহার করছেন, যাতে তার আসল পরিকল্পনা আড়াল থাকে এবং তিনি হয়তো আগামীকালই সেই হামলা চালাতে পারেন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানে বড় ধরনের হামলা শুরু করার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারার মতে, ট্রাম্পের ঘোষিত ‘দুই সপ্তাহের সময়সীমা’ হতে পারে একটি কৌশলগত চমক, যার মাধ্যমে তিনি হয়তো হঠাৎ করেই হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, অথবা ইউরোপীয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে সাময়িক সময় দিচ্ছেন যাতে যুদ্ধ এড়ানোর সুযোগ থাকে। অন্যদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি কেবল রাজনৈতিক সময়ক্ষেপণ বা চাপ প্রয়োগের কৌশলও হতে পারে। এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, কোনও বিষয়ে দুই সপ্তাহের সময়সীমা দেয়া ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু নয়। এটা মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের পুরোনো অভ্যাস। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এই ‘দুই সপ্তাহ’ টাইমলাইনটি ট্রাম্পের খুব পরিচিত কৌশল, যেটা তিনি আগেও বহুবার ব্যবহার করেছেন-তবে বাস্তবায়ন করেননি। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, প্রায় সাড়ে তিন সপ্তাহ আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ থামানোর সদিচ্ছা না দেখায়, তাহলে দুই সপ্তাহের মধ্যে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এখনও সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি। আর গত এক সপ্তাহ আগে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্যারিফ (শুল্ক) কাঠামো নিয়ে আমদানি-রফতানিকারকদের চিঠি পাঠানো হবে দুই সপ্তাহের মধ্যে। এর আগে গত মে মাসে আবার বলেছিলেন, নতুন আমদানি শুল্ক ব্যবস্থা ‘দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে’ কার্যকর হবে তবে সময় পেরিয়ে গেলেও তেমন কিছু হয়নি। এমনকি ২০২০ সালেও তিনি বলেছিলেন ‘সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনা’ প্রকাশ করবেন দুই সপ্তাহের মধ্যে। বাস্তবে কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ হয়নি। এই ‘দুই সপ্তাহের’ সময়সীমা ট্রাম্পের প্রশাসনের প্রথম মেয়াদেও বহুবার দেখা গেছে যেমন পরিকাঠামো উন্নয়ন, কর সংস্কার, বা প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত নানা নীতির ক্ষেত্রে। যদিও কিছু সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত কার্যকর হয়েছে, তবে ইতিহাস বলছে- ট্রাম্পের ক্ষেত্রে ‘দুই সপ্তাহের সময়সীমা’ মানেই সেটি নিশ্চিত কিছু নয়। যুদ্ধ বা শান্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি কী করেন, তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের বাস্তবতার ওপর।
হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে ইরানের রাজধানী তেহরানের আরেকটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার এই তথ্য জানিয়েছেন। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ নিয়ে তৃতীয় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ছয়টি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রও নির্মমভাবে ইহুদিবাদী শত্রুদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইরনায় প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত সাত দিনে কাপুরুষোচিত আগ্রাসনের মাঝে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি লঙ্ঘনের ছয়টিরও বেশি ঘটনা ঘটিয়েছে।’ এদিকে, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের অবসানের বিষয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, সংঘাত অবসানের একমাত্র উপায় হলো ইসরায়েলের বিমান হামলা বন্ধ করা। ইরানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় শান্তি ও স্থিতিশীলতার নীতি বজায় রাখি।’ মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থায়ী শান্তি কেবল তখনই সম্ভব, যখন ইহুদিবাদী শত্রুরা তাদের আগ্রাসন বন্ধ করবে এবং সন্ত্রাসবাদী উসকানি দেয়া থেকে বিরত থাকার বিশ্বাসযোগ্য নিশ্চয়তা দেবে।’ ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে ইরানের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি তারা তা না করে, তাহলে ইরান আরও শক্তিশালী ও ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হবে। মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, শত্রুর আগ্রাসন নিঃশর্তভাবে বন্ধ এবং ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অভিযান চিরতরে অবসানই আরোপিত এই যুদ্ধ বন্ধের একমাত্র পথ।’ অন্যথায় শত্রুদের প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও বেশি গুরুতর এবং ভয়াবহ হবে, বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি। সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানি প্রেসিডেন্ট।
ইরানের ৩ মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস, কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের : ইরানের তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস এবং সামরিক বাহিনীর এক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে আইডিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানী তেহরান এবং অন্যান্য শহরে ১২৫ মিনিটব্যাপী বিমান অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। আইএএফের ৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান এ অভিযানে অংশ নিয়েছিল। সেই অভিযানে ধ্বংস করা হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলো। একই অভিযানে নিহত হয়েছেন ওই কমান্ডারও। ধ্বংস হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলোর অবস্থান কোথায় সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি বিবৃতিতে। তেমনি নিহত ওই কমান্ডারের নাম-পরিচয়ও জানা যায়নি। তবে আইডিএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহত ওই কমান্ডার ধ্বংস হওয়া উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে ছিলেন এবং ‘ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার’ প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রোসফট অফিস, আহত ৭ : ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়েরশেবায় ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মাইক্রোসফটের অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় বড় ধরনের প্রাণহানি না ঘটলেও অন্তত ৭ জন সামান্য আহত হয়েছেন। শুক্রবার সকালে লাইভ আপডেটে এসব তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইরানের হামলায় বিরশেবা সেন্ট্রাল রেলস্টেশন আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে স্টেশনটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে মাইক্রোসফটের অফিস, যা গাভ-ইয়াম নেগেভ নামে একটি আধুনিক প্রযুক্তি পার্কের অভ্যন্তরে অবস্থিত। এখানে রোবটিক্স, ডেটা সায়েন্স এবং উন্নত প্রযুক্তি গবেষণার কাজ চলে। প্রযুক্তি পার্কটির পাশেই রয়েছে বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সি৪আই শাখা, যা মূলত সামরিক টেলিকম ও তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত শাখা। লাইভ আপডেটে আরও উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ ইসরায়েল তুলনামূলকভাবে কম জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সীমিত ছিল। স্থানীয় সময় সকাল হওয়ার আগেই হামলার ঘটনা ঘটে, যখন অধিকাংশ অফিস খোলা হয়নি।
ইসরায়েলে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরান - আইডিএফ : ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরান। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোরবেলা থেকে এই নিক্ষেপ শুরু হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে বলেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। বিবৃতিতে আইডিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার ভোর থেকে ইসরায়েলজুড়ে সাইরেনের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ইরান থেকে নিক্ষিপ্ত একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে বাজছে এই সতর্কতামূলক সাইরেন। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করতে ইতোমধ্যে ডিফেন্সিভ সিস্টেম চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের আহ্বান জানানো হচ্ছে যে, তারা যেন অবিলম্বে বম্ব শেল্টার কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেন। শুক্রবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত কত সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান তা উল্লেখ করা হয়নি আইডিএফের বিবৃতিতে।
হামলা বন্ধ না হলে আলোচনা নয় : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী : ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরান আলোচনায় বসবে না বলে আবারও জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি। আরাঘচি বলেছেন, আমেরিকানরা আলোচনা চায় এবং কয়েকবার বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আলোচনার কোনও সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এই অপরাধের অংশীদার হওয়ায় আমেরিকার সঙ্গে আমাদের কোনও আলোচনা নেই। গত সপ্তাহে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর প্রথমবারের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য জেনেভায় গেছেন আরাঘচি। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার আরও পরের দিকে জেনেভায় ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তার।
মার্কিন পরিকল্পনা নিয়েই জেনেভায় আলোচনা : জেনেভায় ইউরোপীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংলাপের বিষেয়ে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সূত্র বিবিসির প্রধান আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা লাইস ডুসেটের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সাথে বসতে যাওয়া ইউরোপের মন্ত্রীরা মার্কিন পরিকল্পনার ওপরই আলোকপাত করবেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের কাছ থেকে পাওয়া ‘স্পষ্ট বার্তা’ পৌঁছে দেবেন তারা। একটি সূত্র লাইস ডুসেটকে বলেছে, এটা সম্পূর্ণ শূন্যের পথে। নিজের পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সব প্রক্রিয়া বন্ধ করাই ইরানের শেষ উপায়। এমনকি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য দেশটির বাইরে একটি আঞ্চলিক কনসোর্টিয়াম তৈরির প্রস্তাবের বিষয়টিও একই। ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ বৃহস্পতিবার বিবিসিকে বলেছিলেন, ইসরায়েল তাদের সামরিক আগ্রাসন সেই মুহূর্তে শুরু করেছিল, যখন চুক্তিতে পৌঁছানোর দ্বারপ্রান্তে ছিল ইরান। ইরান মনে করেন, কূটনৈতিক প্রক্রিয়াটি ধ্বংস করাই ছিল ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য। খাতিবজাদেহ জোর দিয়ে বলেন, যে মুহূর্তে এই আগ্রাসন বন্ধ হবে, অবশ্যই কূটনীতিই হবে প্রথম বিকল্প। আজ এটিই তেহরানের প্রধান দাবি থাকবে। কারণ উভয় পক্ষই সংঘর্ষ থামানোর পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net