
আনুপাতিক ভোট পদ্ধতিতে নেতা তৈরি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ের দলীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, এখন আনুপাতিক ভোটের কথা বলা হচ্ছে। এটা কেন, এটা কিসের জন্য? এটা হলে তো এলাকায় এলাকায় আর কেউ নেতা হতে পারবে না। রিজভী আরও বলেন, একজন মানুষ দীর্ঘদিন এলাকায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে করতে নেতা হন। অথচ আনুপাতিক ভোটে তাকে নয়, দলকে ভোট দিতে হবে। এরপর দল থেকে বাছাই করে এমপি ঘোষণা করা হবে। তাহলে তো আরও বেশি স্বৈরশাসনের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। স্থানীয় পর্যায়ে আর কোনো নেতৃত্ব থাকবে না, স্থানীয় পর্যায়ে আর কেউ নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আমরা যারা গণতন্ত্রের পরে শক্তি, আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের দ্বারা যেন কোনো সাধারণ মানুষ তিগ্রস্ত না হয়। চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়ানো চলবে না। মানুষ যেন বিএনপির কাছ থেকে ন্যায়বিচার পায়, তারা যেন কোনো বিষয়ে ব্যথিত না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের তরুণরা শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। কখন কাকে ধরে নিয়ে যাবে, আর কার রক্তাক্ত লাশ তিস্তা, গঙ্গা কিংবা শীতল্যা নদীর পাড়ে পাওয়া যাবে, এটাই ছিল নিত্যদিনের চিত্র। এই ভয়াবহ সময় পার করতে হয়েছে আমাদের। শেখ হাসিনার দমন-পীড়নের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। সেই রক্তপিপাসুরা যাতে আবার ফিরে না আসতে পারে, তার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, গণতন্ত্র মানে হচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে মুক্তভাবে মতপ্রকাশ ও সমালোচনার সুযোগ থাকবে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সবাই এক হতে পারি। গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অকল্পনীয় দমন-পীড়ন চালিয়েও দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা যায়নি। গুম, খুন ও নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি ঐক্য ধরে রেখেছে। গণতন্ত্রের আন্দোলনে বিএনপি সবসময় আপসহীন। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জাহিদ হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. আউয়াল, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, ড্যাব নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ‘বিজয়ের বর্ষপূর্তি’ উপলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, রংপুর (ড্যাব)।