
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। তিনি বলেন, আমার ৪০ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে এমন সংকট আর দেখিনি। গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে দৈনিক প্রথম আলো আয়োজিত ‘ইউএস রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য রাখেন তিনি। এ কে আজাদ বলেন, আমরা যাদের কাছে রফতানি করি, সেসব বড় ব্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে চলমান ট্যারিফ নেগোসিয়েশনের খোঁজ রাখছে এবং লবিং করছে। তারা আমাদের স্পষ্ট করে জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে ইতিবাচক ফল আসার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি জানান, এ সংকট নিয়ে যখন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়, তখন লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার দফতরে বার্তা পাঠানো হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল- ৯৫ শতাংশ সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি দেখছি না, বলেন তিনি। একজন ক্রেতার সঙ্গে সাম্প্রতিক যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে এ কে আজাদ বলেন, গতকাল রোববার একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড আমাকে মেইল পাঠিয়ে জানতে চেয়েছে- আগামী ১ আগস্ট থেকে তৈরি হওয়া পণ্যে যদি নতুন শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে তার কত শতাংশ আমি বহন করবো। ওই ক্রেতার কাছে আমার রফতানির পরিমাণ ৮০ মিলিয়ন ডলার, যেখানে আমার লাভ ১.৩৭ মিলিয়ন ডলার। যদি আমাকে ৩৫ শতাংশ শেয়ার করতে হয়, তাহলে আমি টিকবো কীভাবে? সরকারের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সাত-আট মাস পর আপনারা (বর্তমান সরকার) চলে যাবেন। কিন্তু আমরা কোথায় যাবো? আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমাদের কি আপনারা ঝুঁকিতে ফেলে যাবেন? তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করেন, কারও মাথার ওপর কেউ আছেন- তিনি এক ফুঁ দিলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা অন্যরকম। আলোচনায় অংশ নিয়ে লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, আমরা কনফিউজড। বাংলাদেশ সরকার আসলে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে কী পথে হাঁটছে, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। আলোচনায় অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা ও রফতানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের বিরুদ্ধে শক্ত কূটনৈতিক তৎপরতা ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ দেন।