বার্ন ইনস্টিটিউটে তৃতীয় লিঙ্গের লায়লা

বাচ্চাদের কষ্ট দেখে ঘরে থাকতে পারিনি রক্ত দিতে এসেছি

আপলোড সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৫:১৮:৫০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৫:১৮:৫০ অপরাহ্ন
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধ রোগীদের জন্য রক্ত দিতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ রক্তদানের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তাদের পাশাপাশি রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের রক্ত দিতে এসেছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা। এ সময় তৃতীয় লিঙ্গের লায়লা জানান, আমরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। পরিবারের জন্য আমাদেরও মন কাঁদে। ছোট্ট বাচ্চাদের এত মৃত্যু, কষ্ট দেখে ঘরে বসে থাকতে পারিনি। রক্ত দিতে চলে এসেছি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে তিনি এসব কথা বলেন। তৃতীয় লিঙ্গের লায়লা বলেন, উত্তরার মাইলস্টোনে যারা মারা গেছে কিংবা আহত হয়েছে, তারা আমাদের ভাইবোনের মতো। ছোট বাচ্চাদের এত মৃত্যু, আহত দেখে ঘরে বসে থাকতে পারিনি। তাই বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছি। যদি কারো রক্তের প্রয়োজন হয়, আমরা দেব। শুধু লাইলা নয়, তারমতো তৃতীয় লিঙ্গের আরও অনেকেই রক্ত দেওয়ার জন্য বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনে এসেছেন। রাজধানীর মহাখালী, মগবাজার, বনানী, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের রক্ত দিতে এসেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে বসানো হয়েছে অস্থায়ী রক্ত সংগ্রহের বুথ। সেখানেই ভিড় করছেন তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষ। রক্তদাতা হিসেবে তালিকায় নিজের নাম, রক্তের গ্রুপ আর মোবাইল নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন। শান্তি হিজড়া ফাউন্ডেশনের সদস্য মীম বলেন, ওরা তো আমাদেরই সন্তান। আমাদেরই ভাইবোন। আমরা ওদের পাশে দাঁড়াতে চাই। ওদের যদি রক্ত লাগে কিংবা আরও কিছু লাগে, আমরা সবাই সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যাত্রাবাড়ী এলাকার গুরুমা রোকসানা হাজী বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন সংকটে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। আমার দেশের ছেলেমেয়েরা আজ বিপদে। তাদের রক্ত দিতে আমরা এসেছি। আমাদের কোনো পিছুটান নেই। জনগণই আমাদের পরিবার। এদিকে, হাসপাতাল চত্বরে রোভার স্কাউট ও রেড ক্রিসেন্ট সদস্যদের রক্তদাতাদের নাম ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। রোভার স্কাউট সদস্য মো. হাসান বলেন, আমরা এখন শুধু নাম রেজিস্ট্রি করছি। যখনই আমাদের বলা হবে আমরা একে একে রক্ত নেওয়া শুরু করব। মৌলভীবাজার থেকে ছুটে এসেছেন খালেদ আহমেদ। তিনি বলেন, আমার রক্তের গ্রুপ ‘ও নেগেটিভ’। আমি শুনেছি এই গ্রুপের রক্তের দরকার হবে। তাই এক মুহূর্তও দেরি করিনি। ছুটে এসেছি রক্ত দিতে, আর দোয়া করছি যেন শিশুরা সুস্থ হয়ে ওঠে। যাত্রাবাড়ী থেকে আসা ইয়ামিন বলেন, রক্তের অভাবে কেউ কষ্ট পাচ্ছে, আর আমরা ঘরে বসে থাকব এটা তো হয় না। তাই ছুটে এসেছি। লাইনে অনেক নারীদের দেখা যায় অপেক্ষা করতে। কেরানীগঞ্জের নজুরগঞ্জ থেকে আসা আজিজা বলেন, আমি এক আত্মীয়কে নিয়ে এখানে রক্ত দিতে এসেছি। আরও কয়েকজন আসছেন। আমরা শুধু চাই, বাচ্চাগুলো যেন বাঁচে, সুস্থ হয়ে ওঠে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটার পরে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন রক্তের জন্য পর্যাপ্ত ডোনার আছে। নেগেটিভ গ্রুপের কিছু রক্ত লাগবে বলে জানান তিনি। দগ্ধ শিশুদের জন্য সবার কাছে দোয়া চান সায়েদুর রহমান। তিনি হাসপাতালে ভিড় না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net